Jannat | Afran Nisho | Mehjabin | Bangla Natok 2017 | Rtv
শ্রাবন আধারে তুমি
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
পার্ট:২০
আবরার বাড়ীর সবাইকে নিয়ে বের হয়েছে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ৷আবরার যত দ্রুত সম্ভব গাড়ী চালাচ্ছে ৷আবরার বারবার নিজের চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে নিচ্ছে ৷সাদির বলা ঠিকানায় আবরার সবাইকে নিয়ে যাচ্ছে ৷
অপর দিকে আবরার ফুপু বাড়ী থেকে বের হয়ে গেল ৷সবাই চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর সেও বেড়িয়ে গেল ৷গাড়ী চালাতে চালাতে আবরার ফুপু তার প্রেমিক দ্বীপ চৌধুরীকে কল করলো ৷কল করার কিছুক্ষন পরেই দ্বীপ ফোন রিসিভ করলো ৷রিসিভ করেই দ্বীপ চৌধুরী বলল
কি হয়েছে এই অসময়ে কল কেন করলে ৷
তোমার সাথে একটু দেখা করা প্রয়োজন ৷আমি বাসা থেকে টাকা পয়সা ,গহনা সব নিয়ে চলে এসেছি ৷তুমিও চলে এসো তাড়াতাড়ি ৷
দ্বীপ চৌধুরীর চোখ টাকা আর গহনার কথা শুনে চকচক করে উঠলো ৷নিজেকে সামলে সে বলল
এখন তুমি কোথায় আছো ৷
তোমার ফার্ম হাউজের কাছেই আছি আমি ৷তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো ৷আর হ্যা সাথে করে ড্রাইভার বা অন্য কাউকে নিয়ে এসো না ৷বুঝতেই তো পারছো কোটি কোটি টাকার ব্যাপার ৷কেউ দেখলে সন্দেহ করবে ৷ তারপর তুমি আর আমি যেখানে খুশি চলে যাব ৷এসে পড় ৷ আবরার ফুপু ফোন কেটে দিল ৷এদিকে দ্বীপ চৌধুরী খুশিতে মনে হয় পাগলই হয়ে যাবে ৷ সে সাথে সাথে নিজের অফিস থেকে বের হয়ে ফার্ম হাউজের দিকে রওনা দিল ৷
অন্যদিকে আবরার গাড়ী হাসপাতালে এসে পৌছে গেছে ৷আবরার গাড়ী থামিয়ে হাসপাতালের ভেতর দৌড়ে গেল ৷সাদির কথা মতো আবরার তিন তলায় চলে গেল ৷আবরার কোনো হুশ নেই ৷কিন্তু আবরার সেই কেবিনের কাছে যেয়ে দেখলো কেবিনটা ফাঁকা ৷কেবিনে কেউ নেই ৷আবরার একটু দুরেই একজন নার্সকে দেখতে পেল ৷ আবরার তার কাছে দৌড়ে গেল ৷ তারপর বলল
এই কেবিনে রাই নামের যেই রোগী ছিল উনি কোথায় ৷
নার্স বলল আপনি কি ওনার বাড়ীর লোক ৷
আমি ওর স্বামী ৷একটু দয়া করে বলুন না কোথায় আছে ৷এতক্ষনে সবাই চলে এসেছে আবরার কাছে ৷
নার্স নিরাশ কন্ঠে বলল রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ ৷ঞ্জান ফেরার পর থেকেই শুধু সাদি নামের কাউকে খুজছে রোগী ৷কিন্তু অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আমরা তাকে স্পেশাল কেবিনে পাঠিয়ে দিয়েছি ৷আপনারা আমার সাথে আসুন ৷
নার্স কিছুক্ষন পর সবাইকে নিয়ে গেল ৷কেবিনের ভেতরে ঢোকা নিষেধ ৷ তাই নার্স গিয়ে ডাক্তারকে খবর দিল যে সাদি এসেছে ৷ সাথে সাথেই কেবিনের ভেতর থেকে সিনিয়র ডক্টর বের হলেন ৷তারপর বললেন
আপনাদের মধ্যে সাদি কে ৷রোগী তাকে দেখতে চাইছে ৷আপনি তাড়াতাড়ি যান ৷
সাদি দেরি করলো না ৷ভেতরে প্রবেশ করলো ৷
একটু দূরেই একটা স্বচ্ছ বিছানায় রাই শুয়ে আছে ৷সাদিকে দেখে তার মুখে যেন হাসি ফুটঁলো ৷ সাদি কাদঁছে ৷সাদি রাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল ৷তারপর বলল
আমায় এত কেন খুজতে ছিলি ৷ আমি তোর কে হই ৷
সাদি ভাই এভাবে বল না ৷ তুমি আমার মায়ের পেটের ভাই না হলেও তার থেকে বেশি ৷ এত দেরি কেন করলে আসতে ৷আর একটু দেরি করে এলে হয়তো আমাকেই আর পেতে না ৷ তোমার কি হয়েছে ৷তোমাকে কি কেউ মেরেছে ৷
আমার কথা বাদ দে ৷আগে বল তুই কেমধ আছিস ৷
আমার কথা ছাড়ো ৷ আমার একটা কথা রাখবে ভাই ৷ধরে নাও শেষ ইচ্ছে ৷প্লিজ ৷
একদম আজেবাজে কথা বলবি না ৷তোর যা চাই সব আমি এনে দেব ৷বলে ফেল কি চাই তোর ৷
একবার আবরার কে আসতে বলবে ৷তাকে বড্ড দেখতে ইচ্ছে করছে ৷তাকে একবার ফোন করে আসতে বল না সাদি ভাই ৷আমার হয়তো আর বেশি সময় নেই ৷ তার কাছে যে আমার অনেক কিছু চাওয়ার আছে ৷অনেক পাওনা মেটানোর আছে ৷ প্লিজ তাকে একবার এখানে আসতে বল ৷
আবরার বাইরে আছে ৷আমি ওর কাছেই গিয়ে ছিলাম ৷আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি ৷রাইয়ের চোখে জল চলে এলো ৷লোকটা তার সব কথা বোঝে ৷সাদি বাইরে চলে গেল ৷তারপর আবরারকে দেখে বলল
ভেতরে যা আবরার ৷রাই শেষবারের মতো তোকে দেখতে চায় ৷দেরি করিস না আবরার যা তাড়াতাড়ি ৷
আবরার আর দেরি করলো না ৷কেবিনের মধ্যে ঢুকে গেল ৷আবরারকে দেখে বাকি সব নার্স আর ডাক্তাররা বেড়িয়ে গেল ৷
আবরার পা কাপঁছে ৷তার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে ৷আবরার তো এই রাইকে চেনে না ৷এই মেয়েটাই কি কয়েক দিন আগেও তার সব কাজ করতো ৷না এটা তার রাই হতেই পারে না ৷তার রাইয়ের এই কি অবস্থা ৷ আবরার এক ধ্যানে রাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে ৷
আবরারকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রাই বলল
কি ব্যাপার দাড়িয়ে আছেন যে ৷আমার কাছে আসবেন না ৷একটু আসুন না আমার কাছে ৷খুব বেশিক্ষন কষ্ট দেব না আপনাকে ৷
আবরার দৌড়ে রাইয়ের কাছে গেল ৷তারপর ঝাপটে জরিয়ে ধরলো ৷আবরার হাঊমাউ করে কাদঁতে কাদঁতে বলল
এত বড় একটা রোগের কথা আমাকে আগে কেন বললে না ৷আমি কি এতটাই অপদার্থ যে চিকিৎসা করাতাম না ৷এত রাগ আমার ওপর তোমার যে সব লুকিয়ে গেলে ৷আমি এখন কি নিয়ে বাচঁবো ৷তুমি এটা কেন করলে ৷
আপনি এভাবে কাদবেন না দয়া করে ৷আপনার কষ্ট দেখলে আমার বড্ড কষ্ট হয় আবরার ৷আমি আপনার কান্না সইতে পারি না ৷রাই কথা গুলো বলতে বলতে অক্সিজেন মাস্কটা খুলে ফেলল ৷রাইকে মাস্ক খুলতে দেখে আবরার বলল
এটা কেন খুলছো তুমি ৷
রাই হাসল ৷তারপর বলল এমনিতেও আমার প্রান বায়ু ফুরিয়ে এসেছে আবরার ৷আজরাইল আসবে এটা আর কেউ না বুঝলেও মৃত ব্যক্তি বোঝে ৷যেমন আমি বুঝছি এখন ৷আজ আমি যা যা বলবো আপনি ঠিক তাই তাই করবেন কথা দিন আবরার ৷
সারাজীবন তোমার কথা শুনবো ৷ তুমি শুধু আদেশ করে যেও ৷
সারাজীবন কথাটা আমার জন্য মানায় না আবরার ৷আপনার মনে আছে আপনি আমায় একদিন বলেছিলেন ৷আপনাকে সেবা করার বিনিময়ে আমার কি চাই ৷আজকে আমি তার বিনিময় চাইবো দিবেন আমাকে ৷
তুমি শুধু বলে যাও ৷
জানেন আপনার সাথে একবালিশে শুয়ে সারারাত গল্প করার বড্ড লোভ ছিল আমার ৷কিন্তু তা আর হলো না ৷আমার পাশে একটু শুয়ে পড়ুন না ৷আজ আপনার বুকে একটু শুতে দিবেন ৷আপনার বিছানার মতো বড় বিছানা নয় এটা কিন্তু ভালোবেসে আগলে নিলে জায়গা রয়েও যাবে ৷
আবরার দেরি করলো না রাইয়ের পাশে শুয়ে পড়লো ৷রাইকে নিজের বুকে জরিয়ে ধরলো আলতো হাতে ৷রাই তৃপ্তির হাসি হাসলো তারপর বলল
আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবেন ৷আবরার রাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ৷একটু পর পর আবরার কেঁপে উঠছে ৷ হয়তো আজ আবরার ও কাদঁছে ৷
রাই নিজের ভাঙ্গা গলায় বলল আমার মাথায় এখন আর আগের মতো চুল নেই ৷আপনার কি খুব বিরক্ত লাগছে আবরার ৷বিরক্ত লাগলেও আজ আপনার নিস্তার নেই ৷আবরার জানের আপনাদের বাগানে যেই রক্ত জবার গাছটা আগে ঐখান থেকে আপনার বারান্দা স্পষ্ট দেখা যায় ৷আমার শেষ ঘরটা ওখানে বানিয়ে দেবেন আপনি ৷আপনি যখন অকারনে সেখানে এসে দাড়াবেন বারান্দায় ৷তখন আমি নয়ন ভরে আপনাকে দেখবো ৷আপনি যখন আপনার স্ত্রীকে নিয়ে চন্দ্রবিলাস করবেন ৷তখন আমি আপনাদের দেখে আমার নিজের চাওয়া গুলো মিটিয়ে নেব ৷
আবরার এবার জোড়েই কেঁদে দিল ৷তারপর বলল আর বল না প্লিজ ৷আমি আর পারছি না ৷
আজ আমায় বলতে দিন আবরার ৷আমি যে আর সময় পাবো না ৷জানেন আমার ছোট বেলা থেকে খুব শখ ছিল লালা বেনারসি পরে ,গয়না পরে ,লাল টুকটুক বউ সেজে শ্বশুড় বাড়ী যাব কিন্ত তা আর যাওয়া হলো না ৷ কিভাবে সবাই ধরে বেধে বিয়ে দিয়ে দিল ৷তবে এবার সাদা শাড়ী পড়ে যাব ৷আপনার বাড়ীতে হয়তো পালকিতে চরে যাওয়া হলো না ৷কিন্তু খাটিয়াতে করে যেতে পারবো এবার ৷আপনার আর আমার বিয়েতে কাজী এলো না ৷সবাই আমার কবুল বলার জন্য আর অপেক্ষা করলো না ৷কিন্তু জানাযায় ঠিকই আসবে ৷কাতারে কাতারে লোক দাড়াবে ৷আমাকে একটা চুমু দেবেন আবরার ৷একটা প্রথম আর শেষ চুমু দেবেন আমাকে ৷দয়া করে এই চাওয়াটা থেকে আমাকে বঞ্জিত করবেন না ৷
আবরার রাইয়ের মুখটা দুই হাতে আগলে নিল ৷এই মুখটা তার ভালোবাসার মানুষের ৷কই আগে তো এভাবে দেখা হয় নি ৷আগে তো এত কাছে আসা হয় নি ৷সবই অসম্পূর্ন রয়ে গেল ৷ আবরার রাইয়ের কপালে চুমু দিতে গিয়ে আবারো কেদেঁ দিল ৷
আপনি কাদঁছেন আবরার ৷আর আমার কত ভালো লাগছে আপনি জানেন ৷প্রেমিকে প্রথম চুমু অমৃতের মত কাজ করে ৷ যা প্রেমিকাদের বাচঁতে শেখায় হাজার বছর ৷
ওপর দিকে আবরার ফুপু হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে দাড়িয়ে আছে ৷তার চোখে পানি ৷একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে দ্বীপের কাছে তিনি ৷একটু দূরেই দ্বীপ চৌধুরী মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে ৷
কেমন হয়েছে জানাবেন ৷আপনাদের অনুভূতি গুলো আজ আমি পড়তে চাই কমেন্টে ৷
চলবে....
================ 000000 =======================
এক ছাত্রী পড়াতাম 
ছাত্রীর বড় বোন আবার আমার মতোই 

মানে সমবয়সী 

তো অভিনভ পন্থায় আমাকে বললো 
ভাইয়া আপনি তো অনেক সময় লেট করে আসেন 
আবার কোন কোন দিন আসেনি না 

তাই আম্মু বলছে নাম্বার নিয়ে রাখতে 
যাতে করে কখনো না আসলে সিওর হয়ে নেওয়া যায় 
হুট করে পিচ্চিটা বলে উঠল স্যার সব মিথ্যে কথা আম্মু কোন নাম্বার চাইনি 

ব্যাস বুঝে গেলাম কাহিনী কি 

বললাম,
আচ্ছা চলুন আন্টির কাছে গিয়ে দিচ্ছি 
না না ভাইয়া এমনটা করবেন না
( ফারিয়া)
আরে আসুন তো 

তারপর আন্টির সামনে গিয়ে বললাম 
শূন্য মগ 
একটা বিস্কুট 

আর নুডুলস সাত চামচ
সেমাই ছয় চামচ
আর চানাচুর ছয় মুট খেয়েছি 

পাঁচটি ডিম
একটি তরমুজ 
এক হালি কলা 
এক কেজি কাঁচা দুধ
পাঁচ টাকার পান
আর তিন টাকার কাঁচা সুপারি
নিয়ে বাসায় ফিরতে হবে 
তাহলে আসি আন্টি 

আস সালামু আলাইকুম 
ওয়ালাইকুমুস সালাম বাবা যাও তাড়াতাড়ি বাসায় যাও 

আন্টির মেয়ে কি পারবে 



টেকনিক ব্যবহার করে মিলিয়ে নিতে 

