===

অনলাইনে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা ঘরে বসেই উপার্জন

আউটসোর্সিং
উন্নত বিশ্বের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ সমূহ যখন অনলাইনের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তির মাধ্যমে করানো হয়ে থাকে তাকেই মূলত আউটসোর্সিং হিসেবে অভিহীত করা হয়ে থাকে। তুলনামূলকভাবে পারিশ্রমীকের মূল্য কম থাকার কারণে উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশ এক্ষেত্রে আউটসোর্সিং শিল্পে দ্রুত উন্নতি করে চলেছে। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নয় ব্যক্তিগত ভাবেই আউটসোর্সিং কাজ হয়ে থাকে। মূলত ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েব সাইটে আউটসোর্সিংয়ের কাজসমূহ প্রদান করা হয়ে থাকে। জনপ্রিয় আউটসোর্সিং ভিত্তিক সাইট
(www.rentacoder.com)-এর মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়া যায়। এই ওয়েব সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ সমূহ প্রদানের লক্ষ্যে তথ্য প্রদান করে থাকে। প্রাথমিক ভাবে এই সাইট হতে কাজ পেতে হলে সদস্য হতে হবে এবং যে মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা রয়েছে সে তালিকা অনুযায়ী তাকে কাজের আবেদন করতে হবে। মূলত সর্বনিম্ন অর্থের বিনিময়ে যে ব্যক্তি কাজ করারা আগ্রহ প্রকাশ করে তাকেই আউটসোর্সিং কাজ প্রদান করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনার যদি সংশ্লিষ্ট কাজের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি প্রাতিষ্ঠানিক অথবা ঘরে বসেও কাজ করার মাধ্যমে অর্থ আয় করতে সক্ষম হবেন। আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে, পারিশ্রমীকের মূল্য নির্ধারিত হয় ডলারে টাকায় নয়। ফলে আয়ের পরিমাণও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের বিপরীতে প্রাপ্ত আয়ের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে নিঃসন্দেহে।

Rent a Coder, Get a Freelancer, Odesk এর মতো Bid সাইটগুলোর মাধ্যমে বিদেশী কাজ করে, অল্পদিনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। ঙফবংশ এ রয়েছে সারা বিশ্বের সকল প্রকার অনলাইনে করার সুযোগ।আপনি যে বিভাগে অভিজ্ঞ সেই বিভাগই আপনাকে বেছে নিতে হবে।


ডাটা এন্ট্রি
ডাটা এন্ট্রি শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান পূর্বের তুলনায় দিনদিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। সেই সাথে অনলাইনের মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রির কাজের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজের সুযোগও তুলনামূলকভাবে বেশি। ডাটা এন্ট্রি শিল্পে মূলত অনলাইন এবং অফলাইন ভিত্তিক দুটি উপায়ে কাজের সুযোগ রয়েছে। অনলাইন ভিত্তিক কাজে আপনাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি ডাটা সমূহ প্রদান করতে হবে এবং অফলাইনে প্রদানকৃত ডাটাসমূহ নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানভেদে এক হাজার ডাটার জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ফলে মাস শেষে সম্মানজনক আয় করার সুযোগ রয়েছে এই শিল্পে।



পে পার ক্লিক (পিপিসি)
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই জনপ্রিয় অনলাইন আয়ের মাধ্যম পিপিসি। বাংলাদেশে যা গুগল এ্যাডসেন্স নামে সর্বাধিক পরিচিত। এছাড়াও অনেকে
Bidvertiser, Adbrite প্রভৃতি কোম্পানির বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে থাকে।কিন্তু সারা বিশ্বে গুগল এ্যাডসেন্স প্রোগামই সর্বাধিক জনপ্রিয়। চচঈ মূলত একটি জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন প্রচার মাধ্যম। একটি ছোট ওয়েব সাইটের মালিককে কেউই সাধারণত তার কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য অর্থ প্রদান করবে না। PPC কোম্পাণিগুলো বিজ্ঞাপন দাতা ও বিজ্ঞাপন প্রচারকারীর মিডিয়া হিসেবে কাজ করে। এর বিনিময়ে তারা বড় অংকের সার্ভিস চার্জ কেটে নেয়।কেউ যখন কোন PPC বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তখনই বিজ্ঞাপন প্রচারকারীর একাউন্টে টাকা জমা হয় ও বিজ্ঞাপন দাতার একাউন্ট থেকে টাকা কাটা যায়। সাধারণত ওয়েব সাইটের কীওয়ার্ড ভিত্তিক বিজ্ঞাপন প্রচার করার জন্য ক্লিক এর সংখ্যাও বেশী হয়। তবে কোন ওয়েব সাইট প্রচারকারী যদি নিজে ক্লিক করে, তার একাউন্ট PPC কোম্পানি বন্ধ করে দেয়। গুগল এ্যাডসেন্সে জয়েন করার জন্য google.com/adsense এ গিয়ে সাইনআপ করতে হবে।


Affiliatesঅনলাইনে সর্বাধিক অর্থ আয়ের মাধ্যম Affiliate মার্কেটিং। সকল কোম্পানি তার পন্য বিক্রয় করতে চায়। অনলাইনে কোন পন্য বিক্রয় করে কমিশন আয়ের নামই Affiliates মার্কেটিং। অনেক কোম্পানি আছে যারা পন্যের মূল্যের চেয়ে অধিক অংকের কমিশন প্রদান করে। কেননা তারা ভাবে একটি কাষ্টমার শুধু একবারের জন্য কাষ্টমার না। Affiliate মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট হচ্ছে www.cj.com । এ সাইটে সাইনআপ করলে অসংখ্য পণ্যের অনলাইন মার্কেটিং করার সুযোগ রয়েছে।

অনলাইন সার্ভে
বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পন্য কেমন চলবে, তার জন্য অনলাইন সার্ভে কাজ করায়। সেই পন্য সম্পর্কে অভিজ্ঞদের এ ব্যাপারে সাহায্য নেওয়া হয়।



পিটিসি, পিটিএস, সার্ফ, বাক্স
পেইড টু ক্লিক (পিটিসি), পেইড টু সাইন আপ (পিটিএস), সার্ফ, বাক্স ইত্যাদি সহজ কাজের মাধ্যমে যে কেউ অনলাইন থেকে আয় করতে পারে। ওয়েব সাইট ভিজিট করা, ওয়েব সাইটের মেম্বার হওয়ার জন্যই মূলত আপনাকে অর্থ প্রদান করবে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে অর্থের পরিমান থাকে খুবই কম এবং অনেক ভুয়া কোম্পানি রয়েছে। তাই সতর্কতার সঙ্গে মেম্বার হতে হবে।



কলসেন্টার
সারা বিশ্বজুড়েই কলসেন্টার ভিত্তিক বিশাল ব্যবসা পরিচালিত হলেও এটি মূলত টেলিফোন কেন্দ্রিক পরিচালিত ব্যবসা যার মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত হতে টেলিফোনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সেবাসমূহ প্রদান করতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে উন্নত উচ্চ মূল্যে লোকবল নিয়োগ করতে হয়। তাই সে সকল প্রতিষ্ঠান দেশে উচ্চ বেতনে লোকবল এই ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রদান না করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে অনুন্নত দেশসমূহে এই কাজের দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে তাদের অর্থের সাশ্রয় করে থাকে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে যদি কোন ব্যক্তি ফোন করে তবে বাংলাদেশে অবস্থিত কলসেন্টারে কর্মরত ব্যক্তিরা টেলিফোনের মাধ্যমে যে সেবা প্রদান করবে এটিকে মূলত বলা হয়ে থাকে কলসার্ভিস। যুক্তরাষ্ট্রে এই কাজ করতে একজন ব্যক্তিকে পারিশ্রমিক বাবদ যে অর্থ প্রদান করতে হবে তার থেকে অনেক কম অর্থের বিনিময়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত দেশসমূহ হতে কাজ সম্পাদন করা সম্ভব। তাই বিশ্বজুড়েই দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে এই ব্যবসার পরিমাণ। কলসেন্টারকে কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে মূলত দু’ভাগে ভাগ করা যায়।
1. আন্তর্জাতিক কাজের উপর নির্ভরশীল কলসেন্টার 2. দেশের অভ্যন্তরীণ কাজের উপর নির্ভরশীল কলসেন্টার।

বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ কাজের উপর প্রতিষ্ঠিত কলসেন্টার কার্যক্রম শুরু হলেও তা এখনও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে হাতের মুঠোয়। ইন্টারনেট ভিত্তিক কর্মকান্ড সম্পন্নের মাধ্যমে অবারিত হয়েছে অর্থ আয়ের সুবর্ণ সুযোগ। নিজ ক্যারিয়ার গঠনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হতে পারে অনলাইন ভিত্তিক এই সকল অর্থ আয়ের বিষয় সমূহ। বর্তমানে সাধারণ কাজ সমূহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন করে মাসে ১০-৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। সেই সাথে নিজের মেধা এবং পরিশ্রমের সফল সমন্বয় সাধন করা সম্ভব হলে অনলাইন ভিত্তিক নিজের ক্যারিয়ারে উন্নতি সাধন করা যাবে নিঃসন্দেহে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url