===

Dear Ex | Musfiq R Farhan | Parsa Evana | Chashi | Anik | Siam | Mahmud Mahin

Dear Ex | Musfiq R Farhan | Parsa Evana | Chashi | Anik | Siam | Mahmud Mahin

প্রিয়তমা
পর্ব----০১
কাহিনী ও লেখা : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।

দীর্ঘ চার বছর রিলেশন করার পরে সৌভিক আজ জানতে পারলো সিমরান বাস্তবে একজন তৃতীয় লিঙ্গের(হিজড়া)।সে না কোনো নারী,আবার না কোনো পুরুষ।আবার দুটোই।এতোগুলো দিন পরে সিমরানের আসল জন্ম পরিচয় জেনে স্তম্ভিত সৌভিক।মাথায় যেন গোটা আকাশ ভেঙ্গে পড়লো তার।কি করবে বুঝতে পারছে না।
----তুমি আমার সাথে এতো বড়ো প্রতারনা করতে পারলে সিমরান,আমার ভাবতেই অবাক লাগছে!
সিমরান নিশ্চুপ।সে কোনো কথা বলছে না।
---কি হলো আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি,কথা বলছো না কেন?
----আমায় ক্ষমা করে দাও সৌভিক,আমি তোমার থেকে এতোদিন সত্যিটা লুকিয়েছি ঠিক, কিন্তু জানো এতে আমার কোন দোষ নেই।আমি বহুবার চেয়েছি সত্যিটা বলতে,কিন্তু মনে করে দেখো তুমিই তখন বারবার থামিয়ে দিয়েছ আমায়।বলেছো আমার যতো যাই প্রবলেম থাকুক না কেন তুমি কখনো ভুল বুঝবে না আমায়।আমায় ছেড়ে যাবে না।
😔
-----শাট আপ!জাস্ট শাট আপ।তুমি এতদিন ধরে ঠকিয়ে গেছো আমায়।আমার ভাবতেই গা ঘিনঘিন করছে যে আমি একটা হিজড়ার সাথে রিলেশন করেছি,তাকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখেছি।
---তার মানে,কি বলতে চাইছো তুমি?? 
 
---তোমাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।সরি।
---বিয়ে করা সম্ভব নয়,তাহলে বিয়ের স্বপ্ন কেনো দেখিয়েছিলে?
---হ্যাঁ,দেখিয়েছিলাম।কারণ তখন আমার চোখে একটা শক্ত পট্টি বাঁধা ছিলো।কিন্তু এখন আমার কাছে সবটা পানির মতো পরিষ্কার।
 
---আমি তোমাকে অনেকবার বলার চেষ্টা করেছিলাম সৌভিক,তুমি এভাবে সবকিছু অস্বীকার করতে পারো না।যতোবার আমি বলতে চেয়েছি তুমি নিজেকে মহান সাজানোর জন্য বারবার থামিয়ে দিয়েছো আমায়।নিজের ভালোবাসা জাহির করেছো!
---হ্যাঁ,ভুল করেছি আমি।সেটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।আর এখন আমি আমার সমস্ত ভুল সংশোধন করতে চাই।
 
---কি করতে চাও তুমি?
---আজ থেকে আমার সাথে যোগাযোগ রাখার কোনো চেষ্টা করো না।ঐ অপয়া মুখ দেখাবে না আমায়।সৌভিক নামে কেউ ছিলো তোমার জীবনে ভুলে যাও।ওকে।
---প্লিজ,তুমি আমাকে এভাবে ছেড়ে যেতে পারো না।আমি পায়ে ধরছি তোমার,এভাবে ভুল বুঝোনা আমায়।
 
সৌভিক সিমরানের কোনো কথাই কানে তুললো না।ওর জন্য নিয়ে নিয়ে আসা তাজা গোলাপগুলো ছুড়ে ফেলে হনহন করে বেরিয়ে গেলো।
 
সৌভিকের চলে যাবার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো সিমরান।দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে ওর।বুকটা যেন চাপা কান্নায় ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেতে লাগলো।নিজের কাছের মানুষের হাতে লাঞ্ছিত হবার যন্ত্রণা কতো ভয়ানক আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সিমরান।জন্মের সময় ওর মা মারা যায়।এরপর সৎমা আর বাবার সাথে ধীরে ধীরে বড়ো হতে থাকে সিমরান।একসময় বুঝতে পারে,সমাজের আর আট দশটা মানুষের থেকে আলাদা সে।অবশ্য ওর চেহারা আচার আচরণে মানুষের আন্দাজ করাটা বেশ 
 
মুশকিল।সিমরানের পরিবারের লোকজনই সবার আগে বুঝিয়ে দেয় বাস্তবে কে সে।ওর অবস্থানটা ঠিক কোথায়।ধীরে ধীরে আশেপাশের মানুষজনও ওর আসল সত্ত্বার বিষয়ে জানতে পারে।নিজের পরিবার - সমাজের থেকে বিতাড়িত হয়ে নতুন ঠিকানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় সিমরান।সেখানেই সৌভিকের সাথে পরিচয় ওর।সৌভিক নিজেই ওকে প্রথম পছন্দ করে।একের পর এক প্রোপোজ আসতে থাকে।কিন্তু সিমরান যথারীতি এড়িয়ে চলতো তাকে।এক পর্যায়ে সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগও বন্ধ করে দিয়েছিলো।কিন্তু তাতেও কোনো বিশেষ সুবিধে হলো না।সৌভিক নাছোড়বান্দা,সে সিমরানের সাথে 
 
যেকোনোপ্রকারে রিলেশন করবেই।এক পর্যায়ে সিমরান ওর সিধান্তে সায় দিলো।তার আগে বহুবার চেষ্টা করছে সৌভিককে নিজের আসল পরিচয় জানাতে।কিন্তু সৌভিকের ছেলেমানুষীকতায় বারবার বলতে গিয়েও ব্যর্থ হয় সিমরান।যার পরিণাম আজ ভোগ করতে হচ্ছে তাকে।দুজন দুজনকে এতোটাই ভালোবেসে ফেলেছিলো যে এক নিমেষে তাসের ঘরের মতো সবটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে নি সিমরান।আজ সবকিছুর জন্য নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে তার।সৌভিককে অন্ধের মতো ভালোবাসেই আজ এতোটা কষ্ট পাচ্ছে সিমরান,ওর ভালোবাসা এতোটা ঠুনকো ছিলো আজ প্রথম উপলব্ধি করতে পারছে।
 
একরাশ হতাশা আর ভারাক্রান্ত মনে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো সে।বাসায় ফেরার পথে একটা ফার্মেসি থেকে কতোগুলো স্লিপিং মেডিসিন নিলো।ঠিক ততোগুলো যা একজন মানুষের নিজেকে শেষ করে দেবার জন্য যথেষ্ট!!
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,
প্রিয়তমা
পর্ব----০১
কাহিনী ও লেখা : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url